কাতার বিশ্বকাপ জয়ে ফেবারিটের তালিকা করলে সবার আগে নাম থাকতো ব্রাজিলের। তারকাসমৃদ্ধ এক দল, দারুণ একজন কোচ পাওয়াতেই ব্রাজিল সমর্থকরা হেক্সা জয়ের (ষষ্ঠ বিশ্বকাপ) স্বপ্নে বুঁদ হয়ে ছিলেন। তবে তাদের সেই স্বপ্ন ভেস্তে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালেই। ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে ২০ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ভেঙেছে সেলেসাওদের।
বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিলের বিদায়েই প্রধান কোচের পদ থেকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সরে দাঁড়ান তিতে। ২০১৬ সালে কার্লোস দুঙ্গার উত্তরসূরি হিসেবে জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিতে। ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবলে তখন সফলতম কোচ তিনি। তার অধীনে তাই ফের সোনালি ট্রফিতে চুমু আঁকার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন ফুটবলাররা। কিন্তু ২০১৮ বিশ্বকাপের পর ২০২২ এও একই অবস্থা। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় ব্রাজিলের।
আরও একটি ব্যর্থতা নিয়ে তিতের সরে দাঁড়ানো স্বাভাবিকই। তবে তার বিদায়ে কষ্ট পেয়েছেন নেইমার। তাই কোচকে নিয়ে আবেগপ্রবণ বার্তা দিয়েছেন ব্রাজিলের পোস্টারবয়। ব্রাজিলের বিদায়ের পর নেইমারও কেঁদেছিলেন শিশুর মতো। তবে আস্তে আস্তে নিজেকে যেন গুছিয়ে নিচ্ছেন নেইমার। নিজেকে সামনে নিতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে তিতের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে তিতেকে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা কোচ হিসেবে অভিহিত করেছেন পিএসজি তারকা।
নেইমার আশা করেছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ তিতের সময়েই পাবেন। তবে তা হয়নি। কিন্তু নেইমারের মতে, এই বিশ্বকাপটা তিতেরই প্রাপ্য ছিল। তিনি লিখেছেন, ‘এবারের বিশ্বকাপ জেতা আপনার প্রাপ্য ছিল। আমাদের সর্বোচ্চ লক্ষ্য অর্জনে আমরা সর্বোচ্চে চেষ্টা করেছি। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা এভাবে চাননি। প্রফেসর আপনাকে ধন্যবাদ, এত কিছু শেখানোর জন্য। মানসিকভাবে শক্ত থাকো, আপনার এই কথাটা সব সময় আমার মনে থাকবে। এই মুহূর্তে যেটা আমাদের থাকা দরকার। ’
জাতীয় দলে ৬ বছর তিতের অধীনে খেলা নেইমার বলছেন ভালো কোচের পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও অসাধারণ ছিলেন তিতে, ‘আমি জানতাম আপনি ভালো কোচ। কিন্তু আপনার অধীনে খেলার পর মনে হলো আপনি এর চেয়েও ভালো মানুষ। আপনি আমার অন্যতম সেরা কোচ ছিলেন, সামনেও থাকবেন। সব সময় আপনার পাশে আছি। দারুণ কিছু মুহূর্ত একসঙ্গে কাটিয়েছি। আবার কিছু কষ্টের স্মৃতিও আছে। বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার স্মৃতি আমাদের অনেক দিন কষ্ট দেবে। ’
সব মিলিয়ে তিতের অধীনে ৮১ ম্যাচ খেলে ব্রাজিলের জয় ৬১টি, হার ৭টি, বাকিগুলো ড্র।